Best Seller Books

random/hot-posts

কবিদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেনঃ- ﻭَﺍﻟﺸُّﻌَﺮَﺍﺀُ ﻳَﺘَّﺒِﻌُﻬُﻢُ ﺍﻟْﻐَﺎﻭُﻭﻥَ বিভ্রান্ত লোকেরাই কবিদের অনুসরণ করে। ﺃَﻟَﻢْ ﺗَﺮَ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﻓِﻲ ﻛُ...

কবিদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেনঃ-
ﻭَﺍﻟﺸُّﻌَﺮَﺍﺀُ ﻳَﺘَّﺒِﻌُﻬُﻢُ ﺍﻟْﻐَﺎﻭُﻭﻥَ
বিভ্রান্ত লোকেরাই কবিদের অনুসরণ করে।
ﺃَﻟَﻢْ ﺗَﺮَ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّ ﻭَﺍﺩٍ ﻳَﻬِﻴﻤُﻮﻥَ
তুমি কি দেখ না যে, তারা প্রতি ময়দানেই উদভ্রান্ত হয়ে ফিরে?
ﻭَﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﻳَﻘُﻮﻟُﻮﻥَ ﻣَﺎ ﻟَﺎ ﻳَﻔْﻌَﻠُﻮﻥَ
এবং এমন কথা বলে, যা তারা করে না।
ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻭَﻋَﻤِﻠُﻮﺍ ﺍﻟﺼَّﺎﻟِﺤَﺎﺕِ ﻭَﺫَﻛَﺮُﻭﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻛَﺜِﻴﺮًﺍ ﻭَﺍﻧْﺘَﺼَﺮُﻭﺍ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِ ﻣَﺎ ﻇُﻠِﻤُﻮﺍ ۗ ﻭَﺳَﻴَﻌْﻠَﻢُ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻇَﻠَﻤُﻮﺍ ﺃَﻱَّ ﻣُﻨْﻘَﻠَﺐٍ ﻳَﻨْﻘَﻠِﺒُﻮﻥَ
তবে তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ কে খুব স্মরণ করে এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা শীঘ্রই জানতে পারবে তাদের গন্তব্যস্থল কিরূপ।
সূরা শো'আরাঃ২২৪-২২৭।

উক্ত আয়াত থেকে বুঝা যাচ্ছে,
যদি কবিতার অর্থ ও উদ্দেশ্য ভাল হয় তাহলে জায়েয।
কেননা নবীজী সাঃ থেকে কবিতা শুনা ও আবৃত্তি করা হাদীসে প্রমাণিত আছে।
নবীজী সাঃ এর আবৃত্তিকৃত পচন্দনীয় সেই কবিতারাজি যেহেতু দুনিয়া বিমোখী -ন্যয় ইনসাফ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পর্কীয় ছিলো।
তাই তিনি সেগুলো শুনতেন ও আবৃত্তি করতেন।

যেমন হযরত আমর ইবনে (শারিদ, রাযি) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন....
ﺣﺪﻳﺚ ﻋﻤﺮﻭ ﺑﻦ ﺍﻟﺸﺮﻳﺪ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ ﻗﺎﻝ : ﺭﺩﻓﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻮﻣﺎ ﻓﻘﺎﻝ : ﻫﻞ ﻣﻌﻚ ﻣﻦ ﺷﻌﺮ ﺃﻣﻴﺔ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺍﻟﺼﻠﺖ ﺷﻲﺀ ﻗﻠﺖ : ﻧﻌﻢ . ﻗﺎﻝ ﻫﻴﻪ ﻓﺄﻧﺸﺪﺗﻪ ﺑﻴﺘﺎ . ﻓﻘﺎﻝ ﻫﻴﻪ ﺛﻢ ﺃﻧﺸﺪﺗﻪ ﺑﻴﺘﺎ . ﻓﻘﺎﻝ ﻫﻴﻪ ﺣﺘﻰ ﺃﻧﺸﺪﺗﻪ ﻣﺎﺋﺔ ﺑﻴﺖ
ভাবার্থঃ-
আমি একদিন নবীজী সাঃ এর সাথী হলাম, তখন নবীজী সাঃ আমাকে বললেনঃ
তোমার কাছে কি উমাইয়া ইবনে আবীস সালত এর কোনো কবিতা আছে,(অর্থাৎ মুখস্থ আছে)
তখন আমি বললামঃ হ্যা আছে।
নবীজী সাঃ বললেনঃতারাতারি আবৃত্তি করো,
তখন আমি আবৃত্তি করে শুনালাম।
পরবর্তীতে নবীজী সাঃ আবার বললেনঃ
আরো আবৃত্তি করো,তখন আমি আবার  আবৃত্তি শুরু করলাম,এবং শেষপর্যন্ত একশত কবিতা আবৃত্তি করে শুনালাম।
সহীহ মুসলিম-২২৫৫;

তাছাড়া নবীজী সাঃ তারাফা ইবনুল আবদের কবিতাকে মাঝেমধ্যে অাবৃত্তি করতেন।
যেমন হযরত ক্বাতাদাহ রাহ থেকে বর্ণিত
ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ : 534
ﻋﻦ ﻗﺘﺎﺩﺓ ، ﻗﺎﻝ : ﺑﻠﻐﻨﻲ ﺃﻥ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺳﺌﻠﺖ : ﻫﻞ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠَّﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﺘﻤﺜﻞ ﺑﺸﻲﺀ ﻣﻦ ﺍﻟﺸﻌﺮ ؟ ﻓﻘﺎﻟﺖ : ﻻ ﺇﻻ ﺑﻴﺖ ﻃﺮﻓﺔ ، ﻭﺫﻛﺮﺗﻪ ، ﻗﺎﻟﺖ : ﻓﺠﻌﻞ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠَّﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ : ﻣﻦ ﻟﻢ ﺗﺰﻭﺩ ﺑﺎﻷﺧﺒﺎﺭ ،ﻓﻘﺎﻝ ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ : ﻟﻴﺲ ﻫﺬﺍ ﻫﻜﺬﺍ ، ﻓﻘﺎﻝ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠَّﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﺇﻧﻲ ﻟﺴﺖ ﺑﺸﺎﻋﺮ ﻭﻻ ﻳﻨﺒﻐﻲ ﻟﻲ
ﺍﻟﻤﻘﺎﺻﺪ ﺍﻟﺤﺴﻨﺔ ﻓﻴﻤﺎ ﺍﺷﺘﻬﺮ ﻋﻠﻰ ﺍﻷﻟﺴﻨﺔ
হযরত আয়েশা রাযি কে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, যে নবীজী সাঃ কি কখনো কোনো কবিতাকে আবৃত্তি করেছিলেন,আয়েশা রাযি বললেন নবীজী সাঃ একমাত্র তারাফা ইবনে আবিসসালতের কবিতাকেই আবৃত্তি করতেন।
অতঃপর তিনি নবীজী সাঃ এর  উল্লেখ করে বলেনঃ
নবীজী সাঃ আবৃত্তি করতেনঃ-ﻣﻦ ﻟﻢ ﺗﺰﻭﺩ ﺑﺎﻷﺧﺒﺎﺭ
আবু বকর রাযি বলেন, আল্লাহর রাসুল কবিতাপাঠ এভাবে নয়,
প্রতিউত্তরে নবীজী সাঃ বলেনঃ আমি ভালো করে পারব কিভাবে?অথচ আমি কোনো কবি নই এবং কবিতা রচনা করা ও আবৃত্তি করা আমার জন্য উচিৎ ও নয়।
(আসলে পুরো কবিতা এরকম ছিলো-
ﺳَﺘُﺒْﺪِﻱ ﻟَﻚَ ﺍﻷَﻳَّﺎﻡُ ﻣَﺎ ﻛُﻨْﺖَ ﺟَﺎﻫِﻼ ﻭَﻳَﺄْﺗِﻴﻚَ ﺑِﺎﻷَﺧْﺒَﺎﺭِ ﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﺗُﺰَﻭِّﺩِ)
তাছাড়া সাহাবায়ে কেরামদের মধ্যে অনেকেই কবি ছিলেন যাদের মধ্যে হযরত লবীদ রাযি হযরত আলী রাযি এর নাম সর্বাগ্রে।
কিন্তু এখানে জায়গা সংকীর্ণতার ধরুণ
বিস্তারিত আলোচনা এখন আর সম্ভব হচ্ছে না।

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ، ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : " ﺇِﻥَّ ﺃَﺻْﺪَﻕَ ﻛَﻠِﻤَﺔٍ ﻗَﺎﻟَﻬَﺎ ﺍﻟﺸَّﺎﻋِﺮُ ﻛَﻠِﻤَﺔُ ﻟَﺒِﻴﺪٍ :
ﺃَﻻ ﻛُﻞُّ ﺷَﻲْﺀٍ ﻣَﺎ ﺧَﻼ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺑَﺎﻃِﻞٌ ﻭَﻛَﺎﺩَ ﺍﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ ﺍﻟﺼَّﻠْﺖِ ﺃَﻥْ ﻳُﺴْﻠِﻢَ "
ﺃﻣﺎﻟﻲ ﺍﻟﺠﺮﺟﺎﻧﻲ-19
নবীজী সাঃ বলেনঃ
সবথেকে সত্য কথা যা লবীদ( কবিতাকারে)বলতেনঃ
আল্লাহ ব্যতীত সবকিছুই বাতিল★
এবং ইবনু আবিসসালত ইসলাম গ্রহণের পাশাপাশি।

কিন্তু যদি কবিতার অর্থে  কুফর-শিরক ইত্যাদি বিদ্যমান থাকে তাহলে তা জায়েয কখনো জায়েয হবে না বরং তা হারাম বলেই গণ্য হবে।

গজল-সংগিত ইত্যাদিতে  যদি ইসলামি অর্থ বিদ্যমান থাকে,এবং তাতে কোনো প্রকার মিউজিক না থাকে,এবং এ আবৃত্তি কোনো গানের সূরে না হয়, তাহলে তা জায়েয আছে নতুবা হারাম বলে বিবেচিত হবে।

আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

জবাবঃ- এ ব্যপারে সর্বমোট তিনটি মতামত পাওয়া যায়। (ক) সাওম ফাসিদ হয়ে যাবে।কেননা ম্যানথল বা ইনহেলার কিংবা এ জাতীয় অন্যান্য ঔষধ যেমনঃ শাস...


জবাবঃ-

এ ব্যপারে সর্বমোট তিনটি মতামত পাওয়া যায়।

(ক)
সাওম ফাসিদ হয়ে যাবে।কেননা ম্যানথল বা ইনহেলার কিংবা এ জাতীয় অন্যান্য ঔষধ যেমনঃ শাসকষ্ট রোগীদের সেবনযোগ্য গ্যাস ইত্যাদি ব্যবহার করলে গলা দিয়ে খাদ্যনালীতে গিয়ে পৌঁছে যায়।যদিও তা অল্প পরিমাণে গিয়ে পৌঁছক না কেন।(এ জন্য সাওম ফাসিদ হয়ে যাবে)পরবর্তিতে সুস্থ হলে সাওমকে ক্বাযা করে নিবেন।নতুবা ফিদয়া আদায় করবেন।
এটাই পূর্ববর্তী হানাফী মাযহাবের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছিলো।

(খ)
সাওম ফাসিদ হবে না।কেননা ঐ সমস্ত জিনিষের মাধ্যমে ভিতরে চলে যাওয়া জিনিষ নিতান্তই কম, অন্যদিকে এতে মানুষের রয়েছে অনেক ফায়দা নিহিত রয়েছে।এমনকি মানুষ এ সমস্ত জিনিষ ব্যবহার করতে শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে যায়।(এ জন্য সাওম ফাসিদ হবে না)
এ মতামত ব্যক্ত করেছেন আরব বিশ্বের অনেক উলামায়ে কেরাম।
(মুফতিরাতিস সিয়ামিল মুআছির-৩৯-৪৪)

এবং কেউ কেউ বলে থাকেন, বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞানের বক্তব্য অনুযায়ী নাক-কানে সেবনকৃত জিনিষ সরাসরি মস্তিষ্কে বা খাদ্যনালীতে গিয়ে পৌঁছে না।বরং রক্তের সাথে মিশে সারা শরীরে পৌঁছে যায় পরবর্তিতে মস্তিষ্কে পৌঁছে।
যেহেতু সাওম ফাসিদ হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট রাস্তায় পাকস্থলী বা মস্তিষ্কে কোনো কিছু পৌছা জরুরী। তাই এ সমস্ত জিনিষ সেবনের ধরুন সাওম ফাসিদ হবে না।



  1. বর্তমান পালনীয় পদ্ধতিঃ

বর্তমানে কোন পদ্ধতিকে অনুসরণ করা হবে বা পালনীয় সিদ্ধান্ত কি?

এ সম্পর্কে মুফতিয়ানে কিরামগণ নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন।
 এরকম অসুস্থ ব্যক্তিবর্গ ম্যানথল জাতীয় ঔষধ ব্যবহারসহ সাওম চালিয়ে যাবেন।তবে সতর্কতাবশত পরবর্তিতে যখন সুস্থ হবেন,তখন ছুটে যাওয়া সাওম সমূহকে ক্বাযা করে নিবেন।যদি সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে ফিদয়া আদায় করে নিবেন।
কিতাবুন-নাওয়াযিল-৬/৩৮৬।
কিতাবুল ফাতাওয়া-৩/৩৯১।
মারাকিল ফালাহ-৫৬৬।
শামি-৩/৩৬৬।

আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

ﺑﺴْﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮّﺣْﻤﻦ ﺍﻟﺮّﺣﻴْﻢ ﺣﺎﻣﺪﺍ ﻭ ﻣﺼﻠﻴﺎ ﻭﻣﺴﻠﻤﺎ ﺳُﺒْﺤَﺎﻧَﻚَ ﻻَ ﻋِﻠْﻢَ ﻟَﻨَﺎ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﻋَﻠَّﻤْﺘَﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ ﺍﻟْﻌَﻠِﻴﻢُ ﺍﻟْﺤَﻜِﻴﻢُ...


ﺑﺴْﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮّﺣْﻤﻦ ﺍﻟﺮّﺣﻴْﻢ

ﺣﺎﻣﺪﺍ ﻭ ﻣﺼﻠﻴﺎ ﻭﻣﺴﻠﻤﺎ

ﺳُﺒْﺤَﺎﻧَﻚَ ﻻَ ﻋِﻠْﻢَ ﻟَﻨَﺎ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﻋَﻠَّﻤْﺘَﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ ﺍﻟْﻌَﻠِﻴﻢُ ﺍﻟْﺤَﻜِﻴﻢُ
(হে আল্লাহ)আপনি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানি না, তবে আপনি আমাদিগকে যা শিখিয়েছ (সেগুলো ব্যতীত) নিশ্চয় আপনিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, হেকমতওয়ালা।
(২/৩২)

সূচনা......

(১)
বিভিন্ন দিবস যা নির্দিষ্ট তারিখে বৎসরান্তে একবার  আমাদের সামনে ঘুরে আসে,লক্ষ করলে দেখা যায়,দিবসসমূহ এবং ঈদের মধ্যে অদ্ভুত একটা মিল রয়েছে অর্থ্যাৎ যেভাবে হিজরী তারিখ অনুযায়ী প্রতি বৎসর একবার করে আমাদের সামনে দু'টি  ঈদ ঘুরে আসে ঠিক তেমনিভাবে ঐসমস্ত দিবসগুলোও আমাদের সামনে বৎসরান্তে একবার ঘুরে আসে,কেননা ঈদ অর্থ-ই হচ্ছে বারংবার ঘুরে আসা যা আরবী শব্দ عود থেকে রুপান্তিত, এবং তার অর্থ হচ্ছে বারংবার ঘুরে আসা,যেহেতু ঈদ বারংবার ঘুরে আসে বিধায় তাকে ঈদ বলা হয়,এবং এই অর্থ বর্তমানে প্রচলিত দিবস সমূহে পরিলক্ষিত হচ্ছে ।

(২)
ইসলামে ঈদ বা বৎসরান্তে ঘুরে আসা  দিবস দু'টি ঈদ সহ হাতে গুনা দু'একটি দিবস রয়েছে,যা কোরআন-হাদীস দ্বারা সুদৃঢ়ভাবে প্রমাণিত যেমনঃ- ঘুরে আসা সাপ্তাহিক শুক্রবার দিবস যা মুসলমানদের নিকট ঈদ সমতুল্য,আশুরার দিবস, এবং অনির্দিষ্ট লাইলাতুল ক্বদর রজনী, এছাড়া ইসলামে অন্য কোন দিবস-টিবস নেই, অথবা এ মর্মে কোনো প্রমান ও নেই যে, ভবিষ্যতে মানবতা বা দ্বীনী প্রয়োজনে কোন প্রকার দিবস পালন করা যাবে।
বরং ইসলাম জাহিলিয়্যাতের বিভিন্ন দিবসসমূহ  যেমনঃ- নাইরুয/মেহেরজান ইত্যাদি কুসংস্কারকে বলিষ্ঠকন্ঠে নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে।আমরা প্রত্যক্ষ করছি বর্তমান প্রচলিত দিবস সমূহের
মধ্যে রয়েছে কিছু আন্তর্জাতিক দিবস এবং কিছু স্বদেশীয় দিবস,এবং এই দিবস সমূহের মধ্যে কিছু রয়েছে ভালো যেমনঃ-আন্তর্জাতিক  হিজাব দিবস,আন্তর্জাতিক মা দিবস, ও বিভিন্ন রোগে সচেতনতা সম্বলিত দিবস সমূহ।
অন্যদিকে কিছু রয়েছে মানবতা বিদ্বেষী- চরিত্রনাশী ও ইসলাম বিরোধী দিবস সমূহ।
চরিত্রনাশী ও ইসলাম বিরোধী দিবস সমূহ
আন্তর্জাতিক হোক বা স্বদেশীয় হোক পালন করা ও উদযাপন করা কখনো বৈধ হতে পারে না বরং তা স্পষ্টই হারাম এতে কোনো প্রকার সন্দেহ নেই।
কেননা উক্ত দিবস সমূহকে বৎসরান্তে একবার ঈদের মত পালন করা হয়, অথচ ইসলামে যেই সমস্ত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিবস রয়েছে তা নির্দিষ্ট ও বিধিবদ্ধ। এছাড়া আর কোনো কিছুকে বর্ধন করা যাবে না এবং কমানোও যাবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছে :
 ﻣﻦ ﺃﺣﺪﺙ ﻓﻲ ﺃﻣﺮﻧﺎ ﻫﺬﺍ ﻣﺎ ﻟﻴﺲ ﻣﻨﻪ ﻓﻬﻮ ﺭﺩ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﻭﻣﺴﻠﻢ ،

যদি কেউ আমাদের মধ্যে কোনো(ধর্মীয়) নতুন জিনিষ সৃষ্টি করে তাহলে সে আমাদের মধ্য থেকে নয়।
ইবনে রজব হাম্বলী রহ উক্ত হাদিসের ব্যখ্যা করতে যেয়ে বলেন
ﻓﻜﺬﻟﻚ ﻛﻞ ﻋﻤﻞ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻋﻠﻴﻪ ﺃﻣﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ ، ﻓﻬﻮ ﻣﺮﺩﻭﺩ ﻋﻠﻰ ﻋﺎﻣﻠﻪ ،
প্রত্যেক ঐ আমল যা আল্লাহএবং রাসুলুল্লাহ সাঃএর পদ্ধতির সমর্থিত নয়, তা বর্জিত পরিত্যাজ্য।
(জামেউল উলূম ওয়াল হিকাম-১৭৬)
(৩)
সর্ব প্রথম অমুসলিমরাই দিবস সমূহকে  প্রথাসিদ্ধ করেছে, আবিস্কার করেছে,আর অমুসলিমদের অনুসরণ কখনো বৈধ নয়,অন্যদিকে এ দিবস সমূহকে উদযাপন করতে যেয়ে নামায-রোজা তরকসহ অনেক শরীয়ত বিরোধী কাজে লিপ্ত হতে হয় যা শেষপর্যন্ত ঈমান বিদ্বেষী ও মানবতা বিরোধী কাজে মানুষকে পৌঁছে দেয়।
হাদীসে অমুসলিমদের আদর্শ চাল চলন কে অনুসরণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।
ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﻦْ ﺗَﺸَﺒَّﻪَ ﺑِﻘَﻮْﻡٍ ﻓَﻬُﻮَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ) ﺭﻭﺍﻩ ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ( ﺍﻟﻠﺒﺎﺱ / 3512 ) ﻗﺎﻝ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺃﺑﻲ ﺩﺍﻭﺩ : ﺣﺴﻦ ﺻﺤﻴﺢ . ﺑﺮﻗﻢ ( 3401
হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ বলেন যে ব্যক্তি অন্য গোত্রে (অমুসলিম)-র অনুসরণ করবে সে তাদের-ই অন্তর্ভুক্ত হবে।
(আবু-দাউদ-৩৫১২)
বিদগ্ধ গবেষক আল্লামা ইবনে উছাইমিন রহ: বলেন
ﻭﺍﻷﻋﻴﺎﺩ ﺍﻟﺸﺮﻋﻴﺔ ﻣﻌﺮﻭﻓﺔ ﻋﻨﺪ ﺃﻫﻞ ﺍﻹﺳﻼﻡ ، ﻭﻫﻲ ﻋﻴﺪ ﺍﻟﻔﻄﺮ، ﻭﻋﻴﺪ ﺍﻷﺿﺤﻰ ، ﻭﻋﻴﺪ ﺍﻷﺳﺒﻮﻉ ( ﻳﻮﻡ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ) ﻭﻟﻴﺲ ﻓﻲ ﺍﻹﺳﻼﻡ ﺃﻋﻴﺎﺩ ﺳﻮﻯ ﻫﺬﻩ ﺍﻷﻋﻴﺎﺩ ﺍﻟﺜﻼﺛﺔ
শরীয়ত স্বীকৃত ঈদ হল  তিনটা যা মুসলিমদের নিকট অতি সু-পরিচিত,এবং তা হল,ঈদুল আযহা,ঈদুল ফিতর,সাপ্তাহিক ঈদ (শুকুবার)এই তিন ঈদ ব্যতীত ইসলামে অন্যকোন ঈদ নেই
(মাজমু'উ ফাতাওয়া ইবনে ইছাইমিন,২/৩০১)

সুতরাং বিশেষ কোন তারিখ নির্ধারণ করে
"হৃদরোগ দিবস"
"ডায়াবেটিস দিবস"
"হিজাব দিবস"
"মা দিবস"
ইত্যাদি পালন করা কখনো বৈধ হবে না, যদিও কাজটি ভালো হোক এবং জনসচেতনতার স্বার্থে হোক না কেন।
কেননা এগুলো কাজ ভালো হলেও এতে অনেক খারাবী রয়েছে,যেমনঃ- এই সমস্ত দিবসকে ঈদের স্থানে নিয়ে আসা,কাফিরদের অনুসরণ, নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণের সুযোগ সৃষ্টি সহ মুসলিম সমাজে বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ  ইত্যাদি নানান সমস্যা এতে রয়েছে।তাই দিবস পালনকে  শরীয়ত কখনো সমর্থন দিতে পারেনা।
তবে জনসচেতনতার স্বার্থে দিন-তারিখ ঠিক না করে অন্য কোনো প্রদেক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।

আল্লাহ-ই ভাল জানেন।